ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা: ডায়াবিটিস নাকি অন্য কিছু ?

আমাদের সবার শরীরে এমন কিছু রোগ রয়েছে, যেগুলো বাসা বাঁধলেও কিন্তু ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে চলুন আজকে জেনে নেয়া যাক সেগুলি আসলে কী কী। ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বলা হয় যদি কারও দিনে ৮ বারের বেশি প্রস্রাব করা হয় তাহলে, তবে পরিমাণ যা-ই হোক না কেন।

ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা: ডায়াবিটিস নাকি অন্য কিছু ?

প্রতিদিন ঘন ঘন প্রস্রাব আসা, অথবা রাতে বার বার টয়লেটে যাওয়া, এই ধরনের অসুবিধা দেখা দিলে সকলেই চিন্তিত হয়ে পরেন। তারমানে মানে কি আপনার ডায়াবিটিস হয়েছে ❓তবে এগুলা বয়স্কদের মধ্যে এই প্রবণতা গুলো অনেক বেশি। আর প্রেগনেন্ট মহিলারাও কিন্তু এই সমস্যার শিকার হয়ে থাকেন। একজন মানুষের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াটা ডায়াবেটিসের একটি অন্যতম লক্ষণ হলেও এর অধিক পরিমাণ প্রস্রাব অথবা ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া অন্যান্য সমস্যার কারণেও হতে পারে।

এক জন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি যদি সে দিনে ৪ থেকে ৮ বার প্রসাব করে থাকেন। সেটার পরিমাণ যা-ই হোক, দিনে ৮ বারের বেশি প্রস্রাব করলেই তখন তাকে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া হিসাবে বলা হয়। তবে বিভিন্ন বয়সে প্রস্রাবের স্বাভাবিক পরিমাণ বিভিন্ন হয়ে থাকে। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় যদি কোনও পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি তার প্রস্রাবের পরিমাণ মোট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩ লিটার অথবা এর অধিক হলে তখন তা অস্বাভাবিক। চিকিৎসকদের পরিভাষায় একে বলা হয় 'পলিইউরিয়া'।

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বা অধিক পরিমাণ প্রস্রাব - এই উপসর্গ দুটোই আলাদা। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এই দুটো একসঙ্গে দেখা যায়। কারণ প্রস্রাবের পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে গেলে প্রস্রাব ঘন ঘন হয়ে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ঘন ঘন প্রস্রাবের মূল কারণ হল অধিক বা অস্বাভাবিক পরিমাণে প্রতিদিন পানি পান করা। কিন্তু একে ‘সাইকোজেনিক পলিডিপসিয়া’ বলা হয়।

তবে কিছু ক্ষেত্রে কিছু মানুষের শারীরবৃত্তীয় কারণেই কিন্তু বেশি প্রস্রাব দেখা যেতে পারে। যেমন ধরুন অতিমাত্রায় পানীয় পান করা বা অ্যালকোহল সেবন করা, ক্যাফিনযুক্ত পানীয় পান করা, শীতকালে যখন ঘামের পরিমাণ কমে যায়, মেয়েদের গর্ভাবস্থায়, প্রস্রাব বৃদ্ধিকারক ওষুধ সেবন করা, ১০ হাজার ফুট পাহাড়ের উপরে ভ্রমণের সময়ে কিংবা অধিক মাত্রায় ভিটামিন সি ও বি২ গ্রহণ করা ইত্যাদি। এই সব কারণ গুলো খুবই স্বাভাবিক হয়। তবে অনেকের শরীরে কিছু রোগ বাসা বাঁধলেও ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তো জেনে নিন সেগুলি কী কী।

আরও পড়ুন:-

মুখের দুর্গন্ধ স্থায়ীভাবে দূর করার উপায় জেনে নিন

ডায়াবিটিস ছাড়াও অন্য যে সব কারণে অনেকের ঘন ঘন প্রস্রাব হয় তা নিচে দেয়া হলো:

১) মূত্রনালি কিংবা মূত্রথলির সংক্রমণ।

২) মেয়েদের গর্ভাবস্থার প্রথম ও শেষ দিকে।

৩) বয়স্ক পুরুষদের প্রস্টেট গ্রন্থির সমস্যায়।

৪) স্নায়ুরোগ, মূত্রথলির স্নায়ুবিকলতা, মূত্রথলির ক্যানসার।

৫) মস্তিষ্কের টিউমার, অস্ত্রোপচার, আঘাত, কিডনি রোগের কারণে মূত্র নিয়ন্ত্রক এডিএউচ হরমোনের অভাব বা অকার্যকারিতা দেখা দেয়।

৬) কারও কারও শরীরে থাইরয়েড হরমোন বা করটিসল হরমোনের আধিক্য হলে।

৭) রক্তে ক্যালশিয়াম বা পটাশিয়ামের তারতম্য ঘটলে।

উপসংহার

চিন্তা করবেন না, আপনি একা নন! এই সমস্যার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। ডায়াবেটিস তো আছেই, তার সাথে মূত্রনালি সংক্রমণ, প্রস্টেটের ঝামেলা, স্নায়ুর সমস্যা, থাইরয়েড বা করটিসল হরমোনের আধিক্য, এবং আরও অনেক কিছু। তাই, এই সমস্যার সম্মুখীন হলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান। সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে সঠিক চিকিৎসা নিন। এতে শরীরের পানিশূন্যতা বা অন্যান্য জটিলতা এড়ানো যাবে। নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন, কারণ সুস্থ জীবনই সবার চাওয়া।



Tags:-

ঘন ঘন প্রস্রাব হয় কি কারনে, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ কি, ঘন ঘন প্রসাব প্রসাবে জ্বালাপোড়া, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হয় কেন, রাতে ঘন ঘন প্রসাব হয় কেন, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার, রাতে ঘন ঘন প্রসাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার, ঘন ঘন প্রস্রাব প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবের সমস্যা ও সমাধান,

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url